গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম - গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়া যাবে কি
পেজ সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম - গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়া যাবে কি
- গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড কেন উপকারী
- গর্ভবতী মায়েদের জন্য চিয়া সিড খাওয়ার সঠিক নিয়ম
- চিয়া সিড কিভাবে প্রস্তুত করবেন
- অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে কি সমস্যা হতে পারে
গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড কেন উপকারী
গর্ভাবস্থায় অনেক সময় একজন মায়ের শরীরে নানা ধরনের পরিবর্তন ঘটে। এ সময়টা অনেক সেনসিটিভ হয়ে থাকে। এ সময় শরীরের জন্য অতিরিক্ত কস্টিক প্রয়োজন হয় শুধু মা নয় তার গর্ভে থাকা শিশুর জন্য পুষ্টির উপর গুরুত্ব দিতে হবে। চিয়া সিড এমন একটি খাবার যা খুব ছোট হলেও এতে প্রচুর ভিটামিন থাকে খনিজ থাকে প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ একটি খাবার যা গর্ভবতী মায়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী। শিশুদের মধ্যে আছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড যা শিশুর মস্তিষ্ক এবং চোখের বিকাশের জন্য খুবই উপকারী। অনেক সময় অবস্থায় ডাক্তাররা এমন খাবার খেতে বলেন যেগুলো ওমেগা থ্রি সমৃদ্ধ। শিশুর স্নায়ুতন্ত্রকে মজবুত করার জন্য ভবিষ্যতের মানসিক বিকাশের জন্য চিয়া সিড অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার। এছাড়া এতে থাকা ক্যালসিয়াম আয়রন ম্যাগনেসিয়াম ও জিংক থাকাই গর্ভবতী মায়ের হার মজবুত করে দাঁত ও রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে। মা এবং শিশুর শরীরের কিছুক্ষণের জন্য ক্লান্তি ভাগ কমানোর জন্য চিয়া সিড খাওয়া উচিত। গর্ভ অবস্থায় রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় চিয়া সিড এ থাকা আয়রন রক্তের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। এবং এতে যে ফাইবার থাকে তা হজমের জন্য দারুন উপকারী। অনেক মায়ের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা যদি দেখা দেয় তাহলে নিয়মিত খাবেন এই সমস্যা দূর করতে কিছুটা সাহায্য করবে। আশা করা যায় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে দিবে চিয়া সিড। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চিয়া সিড শক্তি ধরে রাখতে পারে। গর্ভবতী মায়ের প্রায়ই ক্লান্তি বা দুর্বল অনুভব সৃষ্টি হয় তাই এমন একটি প্রাকৃতিক খাবার খাওয়া উচিত যা শক্তি ধরে রাখতে পারে। এর জন্য সবথেকে ভালো খাবারটা হচ্ছে চিয়া সিড। চিয়া সিড প্রাকৃতিক খাবার যা শরীরকে ধীরে ধীরে শক্তি দেয় এবং দুর্বল অনুভব কমে যায়। চিয়া সিড খেলে শরীরে পানি ধরে রাখার ক্ষমতা বেড়ে যায়। আর যখন শরীরে পানি ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়ে তখন শরীর হাইড্রেট থাকে। যার ফলে অতিরিক্ত গরমে ক্লান্তি বা মাথা ঘোরা হয় না বা হলেও কম হবে। চিয়া সিডে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা শরীরের কোষগুলোকে সুরক্ষা দেয় এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে ফলে মা কম অসুস্থ হন এবং শিশু সুস্থতা বজায় থাকে। তাই চিয়া সিড গর্ভাবস্থায় এক ধরনের প্রাকৃতিক গোষ্ঠীর উপাদান বা উৎস জামাই শরীরকে ভেতর থেকে শক্ত করে এবং শিশুকে সুস্থ বিকাশ মিশ্রিত করতে সহায়তা করে। তবে একটা জিনিস আপনারা অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যারা গর্ভবতী মায়েরা তারা খাওয়ার পরিমাণ যেন সঠিক থাকে কোন ধরনের অস্বস্তি হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
গর্ভবতী মায়েদের জন্য চিয়া সিড খাওয়ার সঠিক নিয়ম
গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা আছে তবে পরিমাণমতো খেতে হবে। যে কোন খাবার আপনি যদি বেশি খান তাহলে শরীরের ক্ষতি করবে। চিয়া সিড ছোট হলেও এতে প্রচুর ফাইবার রয়েছে প্রোটিন মিনারেল রয়েছে। তাই অবশ্যই বেশি পরিমাণে চিয়া সিড খাওয়া যাবে না অল্প পরিমাণে খেতে হবে। অল্প পরিমাণে অনেক উপকার পাওয়া যায়। অভিজ্ঞদের মতে গর্ভবতী নারী প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে তিন চামচ চিয়া সিড খেতে পারেন। এটি শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী যথেষ্ট এতে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। এটি সরাসরি না খেয়ে আপনি যদি ১৫ থেকে ২০ মিনিট পানিতে অথবা দুধে ভিজিয়ে খান তাহলে সবথেকে ভালো আশা করা যায়। চিয়া সিড ভিজনোর পর ফুলে যায় এবং জেলির মত হয়ে যায়। যার ফলে এটি সহজে হজম হয়ে যায়। ভিজিয়ে না খেলে শরীরের মধ্যে পানি শোষণ করে নিতে পারে ফলে গলা শুকিয়ে যেতে পারে অথবা কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাই আমার পরামর্শ আপনি চিয়া সিড ভিজিয়ে খেলে অনেক ভালো হবে। যদি আপনার প্রথমবার ব্যবহার করার পর শরীরের প্রতিক্রিয়া ঠিক থাকে তাহলে আপনি আস্তে আস্তে এর মাত্রা বাড়াতে পারেন। আপনি চাইলে চিয়া সিড এর পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়াতে পারে। চিয়া সিড খাওয়ার সময় আপনাকে অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। চিয়া সিড পানি শোষণ বেশি করে তাই বেশি করে পানি খাবেন। গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে আপনার শরীরে পানি থাকা প্রয়োজন আপনার শরীরের পানি যদি ঘাটতি দেখা যায় তাহলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে আর এই চিয়া সিড ফাইবার যুক্ত যা প্রচুর পানি শোষণ করে তাই পানি বেশি খাবেন। গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায় শরীর বদলে যাচ্ছে যেমন কয়েক মাসের মধ্যে শরীরের তুলনামূলক সংবেদনশীলতা থাকে তাই খুব বেশি কিছু নতুন যোগ না করাই ভালো। এ সময় যদি চিয়া সিড খুব অল্প পরিমাণে খান তাহলে নিরাপদ। সবচেয়ে ভালো ভাবে ডাক্তার পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত খাওয়া। যদি আপনার রক্তচাপ কমে যায় অথবা ব্লাড সুগার কম থাকে বা হজমের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে চিয়া সিড খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। সঠিক মান বিবেচনা করে চিয়া সিড খাবেন। সঠিক পরিমাণে খাবেন ভুল পরিমাণে যদি খান তাহলে অনেক সমস্যা হতে পারে বাচ্চার বিকাশের সমস্যা হতে পারে মায়ের গর্ভ অবস্থায় সমস্যা দিতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ অবশ্যই নিবেন।
চিয়া সিড কিভাবে প্রস্তুত করবেন
চিয়া সিড ছোট দানার মত হয়ে থাকে। এর ভেতরে প্রচুর পুষ্টি রয়েছে খাওয়ার আগে সঠিকভাবে প্রস্তুত করা খুবই জরুরী। পানি শোষণ করার ফলে এটি যেহেতু জেলের মতন ফুলে যায় তাই এটা ভালোভাবে সঠিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে। কারণ হজমে সমস্যা দিলে এর কোনো উপকারিতা থাকে না। সঠিকভাবে প্রস্তুত করবেন যাতে হজমে সাহায্য করে। প্রথমে আপনাকে অবশ্যই চিয়া সিড ভিজিয়ে নিতে হবে। গ্লাস বাজে কোন পাত্রে আপনি পানিতে অথবা দুধে চিয়া সিড দুই থেকে তিন চামচ দিয়ে দেন এরপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে দেন এটা ভালোভাবে ভিজতে দেন। যখন দেখবেন ভালোভাবে ফুলে উঠেছে তখন সেটা খাওয়ার জন্য উপযুক্ত। অনেক গর্ভবতী নারীর সকালে এক গ্লাস দুধ অথবা পানিতে চিয়া সিড ভিজিয়ে রেখে দিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে সেটা সেবন করেন এতে পেট ভরে থাকবে এবং সারাদিন শক্তি দিবে। রাতে এক কাপ দুধের সাথে এক চামচ অথবা দুই চামচ চিয়া সিড মিশিয়ে রেখে দিন সকালে একটি ঘন হয়ে যাবে তখন এর সঙ্গে ফল মধু অথবা বাদাম দিয়ে দেন এবার তৈরি হয়ে গেল পুষ্টিকর চিয়া পুডিং। যারা চিয়া সিড শুকনো অবস্থায় খাবারে ছিটিয়ে খান যেমন রুটি, সুপে, স্যলাড। গর্ভাবস্থায় এ পদ্ধতিতে আপনি যদি খান তাহলে এটা শরীর যেন তেমন উপকার দিবে না। শরীলের জন্য ভালো হবে না কারণ শুকনো চিয়া সিট পেটে পানি প্রচুর শোষণ করে এতে অস্বস্তি ভাব সৃষ্টি হয় এবং গ্যাসের সমস্যার বৃদ্ধি পায়। তাই ভিজিয়ে খাওয়াই নিরাপদ। খাওয়ার সময় পরিষ্কার জরুরী। অর্থাৎ চিয়া সিড যদি ভাল মানের হয়ে থাকে অর্থাৎ ব্র্যান্ড ভালো হয়ে থাকে দাম বেশি যেগুলোর সেগুলো খেতে হবে সেগুলো অনেক ভালো এতে কোন ধরনের ধুলো ও ময়লা অথবা রাসায়নিক যেন না থাকে এটা বিবেচনা করতে হবে। বাড়িতে আনার পর পরিষ্কার পাত্রে রাখতে হবে এবং আদ্রতা থেকে দূরে রাখবেন। সবচেয়ে ভালো কাছের গ্রহে রাখা। আপনি চাইলে মধু লেবুর রস অথবা কিছু ফলের টুকরো চিয়া সিডের মধ্যে যুক্ত করতে পারেন। এটাও খাওয়া যেতে পারে এটা অনেক ভালো খেতে অনেক মজা। চিয়া সিড খাওয়ার আগে যতটা ভালোভাবে ভিজিয়ে রাখা যায় ততটা উত্তম এতে শরীরের জন্য ভালো। সময় নিয়ে ভিজিয়ে রাখুন তারপরে খান।
অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে কি সমস্যা হতে পারে
চিয়া সিড গর্ভাবস্থায় খেলে খুবই উপকারী। তবে নিয়মিত এবং সীমিত পরিমাণের খেলে তা খুবই উপকারী হবে। আপনাকে বিবেচনা করতে হবে আপনার পেট ফাঁপা না গ্যাসে ভরা আপনার কি কোনো গ্যাসের সমস্যা আছে কি না এগুলো বিবেচনা করবেন। এতে থাকা ফাইবার হজমে সাহায্য করে কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন উপকার ভেবে তাহলে এটা শরীরের জন্য খুবই খারাপ আপনার পেটে গ্যাস জমে থাকবে পেট ফুলে যাবে অস্বস্তি ভাব সৃষ্টি হবে।
অনেস্ট ইনকয়ারি আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url